পরামর্শ ডেস্ক, কমিউনিটি নিউজ: কাজ করতে গেলে প্রায়ই ধারালো সরঞ্জামে লেগে হাত-পা কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আর রান্নাঘরে ছোটখাটো এসব কাটা-ছেঁড়া যেন গৃহিণীদের নিত্যদিনের সমস্যা। শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে।
কাটা ইনজুরি হচ্ছে ধারালো কোনো বস্তু দ্বারা কেটে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হওয়া ; এছাড়াও কোথাও পড়ে গিয়ে, ভোঁতা কোনো জিনিস দিয়ে কোনো আঘাত পেলে সাধারণত ত্বক কেটে না গিয়ে ছিঁড়ে যায় যাকে ল্যাসারেসন হওয়া বলে। কেটে গিয়ে রক্তপাত বন্ধ না হলে অতিদ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। হাসপাতালে নেওয়ার আগে কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষতের সৃষ্টি হলে প্রাথমিকভাবে যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি তা নিম্নরূপঃ
১. প্রথমেই একটি পরিষ্কার কাপড়, গজ দিয়ে কাটা স্থানটি চেপে ধরে রাখতে হবে। এছাড়াও টানা ২০-৩০ মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখলে আপনা-আপনি রক্তজমাট বেঁধে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে।
২. পাশাপাশি ক্ষতস্থানে এক টুকরো বরফও পেঁচিয়ে ধরে রাখতে পারেন।
এক্ষেত্রে কাটা স্থানটি একটু উঁচু করে রাখতে হবে।
৩. রক্ত জমাট বাঁধলে বা রক্তপড়া বন্ধ হয়ে গেলে ট্যাপের প্রবাহিত পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। এরপর কাটাস্থানকে জীবাণুমুক্ত,পরিষ্কার করতে সাবান,আয়োডিন, আয়োডিনজাত অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. কাটা স্থান পরিষ্কার করার পর ওই জায়গায় পাতলা স্তরে অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে ঢেকে দিন। মিউপিরোসিন বা এ জাতীয় মলম সব সময় বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ হিসেবে রাখা উচিত।
৫. উক্ত উপকরণগুলো হাতের নাগালে না পাওয়া গেলে হলুদের গুঁড়া, লবণ পানিও ব্যবহার করতে পারেন।অবশেষে একটি পাতলা গজ,ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষত স্থানটি হালকাভাবে আটকে দিবেন।
৬. ব্যবহৃত গজ ব্যান্ডেজটি সাধারণ গজ ব্যান্ডেজ, স্টিকারযুক্ত ব্যান্ডেজ যেটিই হোক না কেন; প্রতিদিন অন্তত একবার তা পরিবর্তন করবেন। তবে এক্ষেত্রে যদি কাটা জায়গাটি/ক্ষতটি ফুলে যায়,লাল দেখায় বা ব্যথা বেড়ে যায়,ব্যান্ডেজ ভিজে যেতে থাকে, জ্বর চলে আসে সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেরি না করে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
৭. খেয়াল রাখবেন, কেটে-ছিঁড়ে গেলে রক্তপাত হওয়া স্বাভাবিক। তবে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটলে বুঝতে হবে যে, রক্তনালি কেটে গেছে। যা সহজে বন্ধ না হতে পারে।
৮. যকৃতের রোগ কিংবা হিমোফিলিয়া অথবা ডেঙ্গু কিংবা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসপিরিন সেবন করছেন এমন রোগীর রক্তপাত সহজে বন্ধ না হতে পারে।
৯. এমনকি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে নাড়ির স্পন্দন কমে আসতে পারে। একইসাথে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসতে এলে বুঝবেন জীবন বিপন্ন হয়ে আসছে। এতে কোনো রোগী কাটা ছেঁড়ার পর হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। ২৫/৩০ মিনিট চেপে রাখার পরেও রক্তপাত বন্ধ না হলে ওই স্থানটি সেলাই করা লাগতে পারে।