নিজস্ব প্রতিবেদক, কমিউনিটিনিউজ: আজ রাতের আবহাওয়া কেমন? কালকের পূর্বাভাস কী? দেশের ৩ বিভাগে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি দুটি জেলায় শৈত্য প্রবাহ বইতে পারে। একই সাথে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক এ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আগামী কয়েক দিনে শীত বেড়ে ধীরে ধীরে আবারও রাজশাহী ও রংপুরে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
পড়তে পারেন: পানিবন্দি জমির আলু তুলতে ব্যস্ত চাষিরা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গোপালগঞ্জে ৪৫ মিলিমিটার। রাজধানীতে ০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। রংপুর ১৯, সৈয়দপুর ও দিনাজপুরে ১৯ দশমিক ৫, তেঁতুলিয়া ১৫ দশমিক ১, ডিমলা ১৬ দশমিক ৬, রাজাটহাট ১৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৫দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে। আগামী দুইদিন আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।বাড়তে পারে ঠান্ডা। এছাড়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কুতুবদিয়া ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলিসিয়াস
পড়তে পারেন: বৃষ্টিতে খুশি আম চাষিরা, শঙ্কায় সবজি
আজ সন্ধ্যায় প্রকাশিত আগামী ২৪ ঘন্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের নদী অববাহিকায় শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তবাবে হালকা তেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রার তথ্যে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দক্ষিণ অঞ্চলে তা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ/দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় (৮ থেকে ১২) কি.মি. যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ঘণ্টায় ৩০ কি.মি.। আজ সন্ধ্যায় ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ছিল ৬৭ শতাংশ। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিটে আর সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে।
পড়তে পারেন: বৃষ্টি ও শীত নিয়ে নতুন তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
এদিকে গতকাল ভোর থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি প্রচণ্ড বাতাসে জয়পুরহাটে আলুক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বেশির ভাগ আলুক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। কয়েক দিন পরেই ক্ষেত থেকে এই আলু তোলার কথা।
মাঘ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে শঙ্কিত জয়পুরহাটের আলুচাষিরা। বৃষ্টি বেশি হলে জমিতে পানি জমে আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
ক্ষেতলালের বিনশিরা মাঠে পাকরি আলু তুলছেন রফিকুল ইসলাম ও তার মা। রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে। এই আলু তোলার এখনো সময় হয়নি। কিন্তু বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। পানি জমিতে থাকলে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাঁদার মধ্যে আলু তোলা হচ্ছে। পরে তা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
কালাইয়ের থুপসারা গ্রামের আলুচাষি রবিউল ইসলাম, রনি হোসেন বলেন, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম কম। প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টির পানি। আলুর খেত নিমজ্জিত হওয়ায় জমিতে পানি জমেছে। আলুর জমিতে পানি জমে থাকলে পচন ধরবে। এতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।
পড়তে পারেন: লালপুরে বাণিজ্যিকভাবে বেদেনার চাষ শুরু
সদরের বম্বু ঘোনাপাড়া গ্রামের আলুচাষি আবদুল খালেক বলেন, নিজের ২ বিঘা এবং বর্গা নেওয়া ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে প্রায় ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরলে পথে বসতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার হেক্টর, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার হেক্টর ও আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
কমিউনিটি/এমএইচ