কৃষি ডেস্ক, কমিউনিটি নিউজ: যেদিকে চোখ যায় চারপাশে সবুজ আর সবুজ। বিস্তৃর্ণ মাঠে সবুজে বিছানো খিরার গাছ। সবুজ পাতার মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে হলুদ ফুল। আর কিছু কিছু ডগায় জুলছে কচি খিরা। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার খিরার খেতে যেয়ে এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সকল খাতের মতো কৃষি খাতও সমস্যায় পড়েছে। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় চলতি বছর ১২শ ৩১ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জেলার দাউদকান্দি, হোমনা, মেঘনা, দেবিদ্বার উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খিরা চাষ হয়েছে।জেলায় এবার খিরার বাম্পার ফলন হলেও খেত থেকে খিরা বাজারে যেতে যেতে ১৮ টাকা বেশি দাম বেড়ে যায়। যার পুরো লাভই যায় পাইকারদের হাতে।
সরেজমিনে হোমনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা খেত থেকে খিরা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত। কারো সাথে কথা বলার সময়ও নেই। কে আগে কাজ শেষ করতে পারবে এ নিয়েই যেনও প্রতিযোগিতা চলছে।
এসময় কথা হয় কৃষক রহমত মিয়ার সাথে। তিনি এবার ৫০ শতক জমিতে খিরার চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। ‘খেতে খিরার ফলন ভালোই হয়েছে। তবে বেশি ফলন হওয়ায় পাইকাররা দাম কমিয়ে ফেলেছে।’ এভাবেই হাসি মুখে জানাচ্ছিলেন এ কৃষক।
জমিতে ভাই ও বোনকে নিয়ে খিরা সংগ্রহ করছিলেন জামাল হোসেন। তিনি জানান, এ বছর ৬০ শতক জমিতে খিরা চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা।

খিরার ফলন ভালো হয়েছে বলে ফারুক হোসেন বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে অন্তত ১ লাখ টাকার খিরা বিক্রি হবে। খরচ বাদ দিয়ে মুনাফা হবে ৮০ হাজার টাকা।
স্থানীয় কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে খুচরা ধরে ৩০ টাকা কেজি করে খিরা বিক্রি হয়। আর সেই খিরা কৃষকেন কাছ থেকে কিনা হয় মাত্র ১২ টাকা করে। শুধুমাত্র একহাত বদলের মাধ্যমে কেজিতে ১৮ টাকা বেড়ে যাওয়া নিয়ে কৃষকদের রয়েছে অনেক অভিযোগ। কৃষক মতি মিয়া বলেন, খিরার ফলন ভালো হয়েছে। তবে পাইকারদের হাতেই তো আমাদের অনেক টাকা চলে যায়।
তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কুমিল্লায় খিরার বাম্পার ফলন হলেও কৃষি অধিদপ্তরের প্রত্যাশিত সহায়তার ঘাটতু রয়েছে বলে জানান কৃষকরা। বিভিন্ন সময় খেতে পোকার আক্রমণ, গাছের রোগ ঠেকাতে তেমন কার্যকরী পদক্ষেপ বিষয়ক পরামর্শ পাননি তারা।
দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কিছু লোকবল সমস্যা রয়েছে। তবে কৃষকের যে কোনো সমস্যায় কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে সেবা দিয়ে আসেন। আমি নিজেও অধিকাংশ সময় মাঠে পড়ে থাকি। কৃষকদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা শুনি। পরামর্শ না পাওয়া নিয়ে যে কৃষক অভিযোগ করেছেন তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেবা দেয়া হবে।