নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: লকডাউনের খবরে বিভিন্ন স্থানে নিত্যপণ্য কিনে মজুদ করতে গত দুদিন বাজারে মানুষের ভিড়। এরমধ্যে তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। কঠোর লকডাউন এর মধ্যে সামনে রমজানে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়বে-এমন আরো অনেক কথার সঙ্গেই লকডাউনের ঝামেলা এড়াতে নগরীতে বাজারমুখী হচ্ছে নগরবাসী। বাজারে ভিড় বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন।
আজ রোববার (১১ এপ্রিল) নগরীর সাহেব বাজার, কোর্ট বাজার, নিউ মার্কেট, গণকপাড়া ঘুরে দেখা যায়, নগরীর সাহেব বাজার আরডিএ মার্কেটে ক্রেতা সমাগম সবচেয়ে বেশি।
আরো পড়ুন:
সামনে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে দেশ। ঈদের আগে হয়তো আর লকডাউন ছুটছে না। গতবার ঈদের কেনাকাটাও করতে পারেনি।
ঈদ কেন্দ্রিক বেচাকেনার মতোই বাজারগুলোতে মানুষের ভিড় ছিলো। নগরীর অন্যান্য জায়গায় যানবাহন চলাচল কিছুটা কম থাকলে সাহেব বাজার এলাকায় ক্ষুদ্র যানজটের সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
গত দিনের মতো নগরীর শপিংমলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে আগ্রহ দেখা গেলেও মার্কেটের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিতই ছিলো। অথচ শর্ত সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলো সরকার। কিন্তু সেই শর্তের বাস্তবায়ন খুব কমই দেখা গেছে।
ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দৈনিক ভিত্তিতে আয় করে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে থাকেন। লকডাউনের কথা শুনে শনিবার ও রোববার তারা খাদ্যসামগ্রী কেনায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে যাদের আয় ভালো আবার কারো পরিবারের সদস্য থাকেন প্রবাসে। এই ধরণের পরিবারের মানুষ টানা এক মাসের হিসাব করে খাদ্যসামগ্রী কিনে মজুদ করে রাখছেন।
মার্কেট ব্যবসায়ী মঞ্জুর আলি বলেন, লকডাউনের কারণে কয়েকদিন তেমন কোন ক্রেতা ছিলো। কিন্তু সামনে কড়াকড়ি লকডাউনের খবরে ক্রেতা বেড়েছে। গতকাল থেকেই মূলত ক্রেতা বেশি। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন সরকারি নির্দেশনানুযায়ী মাস্কসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার। কিন্তু কিছুক্ষেত্রে হয়তো স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হচ্ছে না।
নগরীর কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় ছিলো। মাস্টারপাড়া ও সাহেব বাজার কাঁচাবাজারে পা রাখার জায়গা ছিলো না। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে গাদাগাদি করেই বাজার করতে দেখা গেছে মানুষকে।
এ বিষয়ে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী জানিয়েছিলেন, সামনে কড়াকড়ি লকডাউন আসন এখন খবরেরই ক্রেতা বাড়ছে। আর এ কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনেক ক্ষেত্রে নিশ্চিত হচ্ছেনা। এক্ষেত্রে সার্বক্ষনিক মনিটরিংয়ের দাবি জানান তিনি।
এদিকে, লকডাউনের গত দিনগুলোর মতোই দিনের বেলা বাজারগুলোতে পুলিশের মনিটরিং কম ছিলো। পুলিশের উপস্থিতি থাকলে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হচ্ছে। কিন্তু তারা চলে গেলেই উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
কমিউনিটিনিউজ / এমএএইচ
লাইফ সাপোর্টে ফরিদ আহমেদ
কমিউনিটিনিউজ ডেস্ক: শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে করোনায় আক্রান্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদের। ১১ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয় তাকে। সেখানে গিয়েও উন্নতি হয়নি৷ আজ তাকে ভোর ৪টার দিকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (লাইফ সাপোর্ট) দেওয়া হয়।
আজ রোববার (১১ এপ্রিল ২০২১) দুপুরে ফরিদ আহমেদের সহকর্মী গীতিকবি ফরিদা ফারহানা জানান, ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর চিকিৎসকরা মতামত জানাবেন ।
আরো পড়ুন:
- বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের নবউন্মীলনে চাই সরকারি উদ্যোগ
- বন্ধ রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্র
- করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, ‘এত দ্রুত এতোটা অবনতি ঘটবে , আমরা ধারণাও করতে পারিনি। ভোর ৪টার দিকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সবার কাছে দোয়া চাই স্যারের জন্য। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই পারেন স্যারকে বাঁচাতে।
এর আগে মার্চের শেষ সপ্তাহে সস্ত্রীক করোনা পজিটিভ ফল পান ফরিদ আহমেদ। অবস্থার অবনতি হলে ২৫ মার্চ রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই সংগীত পরিচালককে। এর মধ্যে স্ত্রী শিউলি আক্তারের অবস্থা ভালো হলেও ফরিদ আহমেদের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
উল্লেখ্য, কালজয়ী গানের সুরকার ফরিদ আহমেদ। স্কুলবন্ধু বায়েজীদের কাছে গিটারে তাঁর হাতেখড়ি। এরপর ফিরোজ সাঁইয়ের হাত ধরে পেশাদার সংগীতাঙ্গনে তাঁর পথচলা। ব্যান্ড ‘স্পন্দন’-এ তখন তিনি বেজ গিটার বাজাতেন। ফিরোজ সাঁই ‘স্পন্দন’ ছেড়ে দিলেও তার সঙ্গে থেকেই তিনি গিটার বাজাতেন। লিটন অধিকারী রিন্টুর লেখা ও কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘তুমি ছাড়া আমি যেন মরুভূমি’ গানে সুর করে প্রশংসিত হন ফরিদ আহমেদ। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত বহু গানের সুর তৈরি করেছেন তিনি। করেছেন সংগীতায়োজনও।
বিশেষ উল্লেখ করতেই হয় হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’-এর টাইটেল সং ‘কেউ কেউ অবিরাম চুপি’, কুমার বিশ্বজিতের ‘মনেরই রাগ অনুরাগ’,‘আমি তোরই সাথে ভাসতে পারি মরণ খেয়ায় একসাথে’, রুনা লায়লার ‘ফেরারী সাইরেন’, রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে ‘দলছুট প্রজাপতি’, চ্যানেল আইয়ের ‘আজ জন্মদিন’, ‘খুদে গানরাজ’, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’, সেরা কণ্ঠ প্রতিযোগিতার থিম সং, সুমী শবনমের জনপ্রিয় গান ‘ললিতা’, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে সিনেমার গান ‘তুমি আমার জীবনের গহিনে’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় গানের সুরকার তিনি। নূর হোসেন বলাইয়ের ‘নিষ্পত্তি’ চলচ্চিত্রের প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন ফরিদ আহমেদ।
২০১৭ সালের সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘তুমি রবে নীরবে’ সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করে এ পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই সিনেমার পরিচালক মাহবুবা ইসলাম। এই সিনেমার আবহ সংগীতের কাজও করেন ফরিদ আহমেদ।
কমিউনিটিনিউজ / এমএএইচ