নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহীতে ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আশিক আলী নামের এক যুবক। মোটরসাইকেলটি আটকের পর কাগজপত্র চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এ কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। রাজশাহী নগরের কোর্ট হড়গ্রাম এলাকায় সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেলটির মালিক আশিক আলী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কাঁঠালবাড়িয়া হাটুভাঙ্গার মোড় এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম আসাদ আলী।
প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার রাজশাহী নগরের কোর্ট হড়গ্রাম মোড়ে দায়িত্বপালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট কাইয়ুম। বেলা একটার পর ওই এলাকা দিয়ে বাবাকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন আশিক আলী। এ সময় তার মোটরসাইকেল আটকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেন সার্জেন্ট কাইয়ুম। কিন্তু তার কাছে কোনো কাগজপত্র ছিল না। বাড়ি থেকে কাগজপত্র আনার জন্য সময় চান তিনি। তবে সার্জেন্ট তার সেই অনুরোধ না শুনে মোটরসাইকেলটি জব্দ করেন। এরপর সার্জেন্ট কাইয়ুম রাস্তায় অন্য মোটরসাইকেলের কাগজপত্র চেক করতে থাকেন। এ সময় আশিক আলী তার মোটরসাইকেলের কাছে গিয়ে সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় আশিক আলীকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
আশিক আলী বলেন, তিনি মোটরসাইকেল কেনার পর তিনবার মামলা খেয়েছেন। প্রতিবারই মোটরসাইকেল তিন-চার দিন করে আটকে রাখা হয়। এরপর টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে হয়। তিনবার গাড়ি ছাড়াতে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সঙ্গে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র ছিল না। তিনি পাঁচ মিনিট সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে চাবি নিয়ে নেন ট্রাফিক সার্জন্ট কাইয়ুম।
আশিক আলীর বাবা আশাব আলী বলেন, তার ছেলে ট্রাফিক সার্জেন্টের কাছ থেকে তিনবার মামলা খেয়েছেন। ব্যাংকে ২০ লাখ টাকা দেনা সংক্রান্ত মামলাও রয়েছে। সব মিলিয়ে তার (আশিক আলী) মন খারাপ। এ অবস্থায় আজ আবার গাড়ি আটকে দেওয়া হয়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমা বলেন, সার্জেন্ট কাইয়ুম ওই এলাকায় দায়িত্বপালন করার সময় আশিক আলীর গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র দেখাতে বলেন। কিন্তু আশিক তা দেখাতে পারেননি। পরে গাড়িটি এক পাশে রাখা হয়। এরই এক ফাঁকে তিনি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ঘটনার পর আশিক আলীর বাবা জানিয়েছেন, এর আগেও তার ছেলের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা হয়েছে। ব্যবসাসংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এ জন্য তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
এ ঘটনায় আশিক আলীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।